করম পরবের বৈশিষ্ট্য
করম পরব ভাদ্র মাসের শুক্ল পক্ষের একাদশীর দিন অনুষ্ঠিত হয়। করম পূজাতে ভালো ফসল উত্পাদনের কামনা ভগবানের কাছে করা হয়। অর্থাৎ এক কথায় বলতে গেলে, করম ঠাকুর প্রকিতি দেবতা রূপেই পূজিত হন।
এই সময় সারা মাঠ সবুজ শস্যে ভরে থাকে। প্রকিতি থাকে তার খুশির আমেজে। এই সময় শস্যে ভরা মাঠ দেখলে মনে হয় প্রকিতি তার যেন ঝুলি খুলে দিয়েছে আদিবাসীদের প্রাথর্নায় সাড়া দিয়ে।
পুজোর নিয়ম মেনেই গ্রামের আদিবাসী ভাইরা খালি পায়ে তাদের বোনদের শ্বশুর বাড়ি থেকে আনতে যায়। বোনরা তাদের ভাইদের জন্য প্রাথর্না করে। পুজোর রীতি অনুযাই পুজোতে সকলে নতুন জামাকাপড় পড়ে।
আদিবাসীদের জীবনশৈলী উত্পাদিত শস্যের উপর খুবই নির্ভরশীল। এই পুজোর মাধ্যমে তারা মনে করে ভালো শস্য উত্পন্ন হবে এবং সংসার ভালোমত চলবে।
রীতি -নীতি
এই পুজোর রীতি হল গ্রামবাসীরা জঙ্গলে গিয়ে পুজোর জন্য কাঠ,ফুল,ফল সংগ্রহ করতে যায়। করম গাছের থেকে তারা একটা ডাল কেটে নিয়ে আসে। ঐ ডালটিকেই তারা 'করম 'দেবতা মনে করে। ডালটিকে ঘিরেই সাঁওতাল গ্রামবাসীরা গান-নাচ করতে থাকে।
সারারাত ধরে যে নাচ চলে তাকে করম নৃত্য বলা হয়। যে ডালটাকে জঙ্গল থেকে কেটে আনা হয় তাকে 'করম রাজা' বলা হয়।
ডালটিকে মাটিতে শাবল দিয়ে গর্ত করে পোঁতা হয়।তাতে জল দেওয়া হয়। দিয়া-বাতি জ্বালিয়ে দুধ,ঘি দিয়ে ডালটিকে পুজো করা হয়।
পরের দিন করম ঠাকুরকে ফুল দিয়ে পুজো করা হয়। চাল এবং দই প্রসাদ হিসাবে দেওয়া হয়। প্রসাদের একটি নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। লাল রঙের ঝুড়িতে গম রাখা হয় ,তাতে হলুদ এবং শশা দেওয়া হয়। পুজোতে যারা উপোস থাকে পুজো শেষে তারাই এগুলো খায়।
যুবক আদিবাসীরা বার্লির বীজ হাতে নিয়ে রাখে। সারারাত ধরে চলে আরাধনা। বাবা-মা রা তাদের সন্তানদের জন্য নতুন ধুতি,পাগড়ি ,ঘুংরা কিনে আনে। পরের দিন করম ডালকে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়।
বিশেষ সুরা প্রস্তুতি
আদিবাসীরা সকলে মিলে এই পার্বনে মেতে ওঠে এবং সকলে 'হান্ডিয়া' পান করে। যা মূলত চাল দিয়ে তৈরী সুরা। চাল ছাড়াও এতে দই এবং সবজি থাকে।
পরবের সঙ্গে জড়িত আরো এক গল্প
এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে আরো একটি ঘটনা প্রচলিত আছে। গ্রামের সাত ব্যস্ত থাকে ফসল উত্পাদন করতে। তদের বউরা মাঠে তাদের জন্যে খাবার নিয়ে যায়। কিন্তু একদিন একটা ঘটনা ঘটে ,গ্রামের
বউরা স্বামীদের জন্যে মাঠে খাবার নিয়ে যায় নি ,তার ফলে স্বামীরা ক্ষুদা পেট নিয়ে বাড়িতে ফিরে এসে দেখে বউরা সকলে মিলে বাড়ির করম গাছকে ঘিরে গান-নাচ করছে। তা দেখে স্বামীরা খুব রেগে যায় এবং করম ডালকে ছুঁড়ে পুকুরে ফেলে দেয়। তারপর থেকেই তা মনে করে, তাদের সংসারে নেমে আসে অভাব-অনটনের করাল ছায়া। এবং তারা ভাবেন করম ঠাকুর এতে রুষ্ঠ হয়েছে।
একদিন তাদের গ্রামে এক ব্রাহ্মন সন্ন্যাসী আসে। সাত ভাই-বোন মিলে এর থেকে প্রতিকার পাওয়ার পথ ব্রাহ্মনকে জিজ্ঞাসা করে। ব্রাহ্মন উপদেশ দেয় করম গাছকে পুজো করার জন্যে। তাহলে সাত-ভাইয়ের অর্থনৈতিক অবস্থা ও পরিবার দুইই সুখের হবে।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার:- www.google.com
একদিন তাদের গ্রামে এক ব্রাহ্মন সন্ন্যাসী আসে। সাত ভাই-বোন মিলে এর থেকে প্রতিকার পাওয়ার পথ ব্রাহ্মনকে জিজ্ঞাসা করে। ব্রাহ্মন উপদেশ দেয় করম গাছকে পুজো করার জন্যে। তাহলে সাত-ভাইয়ের অর্থনৈতিক অবস্থা ও পরিবার দুইই সুখের হবে।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার:- www.google.com
No comments:
Post a Comment