Monday, 23 November 2015

Problems of Karam Parab and their Solutions..

করম পরব অবলুপ্তির কারণ 

করম গান ও নাচ 

বর্তমান সময়ে আর্থসামাজিক পরিবর্তনের সাথে সাথে লোকউত্সব এরও যে রূপ পরিবর্তন হবে তা স্বাভাবিক। 

সমস্যা -  
ক. বাংলার পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিম সীমানা ঝাড়গ্রাম মহকুমা ও তার আশেপাশের এলাকায় ভাদ্রমাসে এই পরব পালিত হয়। নারী ও ধরিত্রীর উর্বরতা কামনায় পালিত এই পরবের চল রয়েছে ঝাড়খন্ড, উত্তর ওরিষ্যা এবং ছত্তিশগরের কিছু অংশে। বর্তমানে এই সব অঞ্চলে এই পরব অনেকটাই হারিয়ে গেছে। 
. করম মূলত শস্যের উত্সব হলেও বর্তমানে চাষের জমির সংখ্যা অনেকটাই কমে গেছে। 
. আদিবাসী জনজাতি পরিবারের ছেলেমেয়েরা এখন স্কুল-কলেজে যাচ্ছে।শহর মুখী হচ্ছে। বাপ-ঠাকুরদার ভিটে আগলে গ্রামীন জীবিকায় বাঁধা পড়তে চাইছে না। তথাকথিত আধুনিকতার নাম দেখা যাচ্ছে সংস্কৃতির অবক্ষয়। সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার টিকিয়ে রাখার সময় চলে এসেছে। 
ঘ. করমের মূল আকর্ষণ গানও নাচ। সেই গান ও নাচের সংরক্ষণের অভাব। 
. লোকউত্সবটির উপর মিডিয়ার ফোকাসের অভাব। 
চ. শস্য উত্সব হওয়ার ফলে বছরের বাকি সময় করম গান ও নাচকে নিয়ে মাতামাতি দেখা যায় না। 
ছ. পরবটি মূলত সাঁওতাল পরব বলে সভ্য সমাজের মানুষেরা গ্রহণ করতে দ্বিধা বোধ করে এমনও নিদর্শন মেলে। 
        এই সমস্যা গুলি অতিক্রম করতে না পারলে একদিন করম পরব অবলুপ্ত হয়ে যাবে। 

সমস্যা কাটিয়ে ওঠার কিছু উপায় -

ক. সব থেকে প্রথম যেটা দরকার তা হল,সরকার দ্বারা আয়োজিত বিভিন্ন লোকসংস্কৃতির মেলায় বাউল গান, ঝুমুর নাচের পাশাপাশি করম নাচ ও গানকে জায়গা দিতে হবে। প্রয়োজনে স্থানীয় যারা করম গান-নাচ করে তাদের সরকারী খরচে নিয়ে আসতে হবে। 
খ. যারা লোকসঙ্গীতের চর্চা করেন সেইসব শিল্পীদের উদ্দ্যোগী হয়ে তাদের কন্ঠস্বরের জাদুতে শ্রোতাদের কাছে করম গানকে জনপ্রিয় করে তোলার ভার নিতে হবে। 
গ. ডকুমেনট্রি, শর্টফিল্ম এর মাধ্যমে এই লোকউত্সব টিকে তুলে ধরতে হবে। 
ঘ. দুরদর্শন, জ্ঞানবাণী এর  মাধ্যমে  নিয়মমাফিক প্রচার, বুদ্ধিজীবিদের এনে প্রচার। যারা এই বিষয়ে রিসার্চ করছে তাদের দ্বারা প্রচার, যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয় পড়ানো হয় সেখানকার ছাত্র-ছাত্রীদের এনে তাদের মতামত প্রচারে জোর দেওয়া।
ঙ. যেসব অঞ্চলে এখনও এই পরব উদযাপিত হয় সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারের এগিয়ে আসতে হবে প্রচারমুখী হয়ে
চ. এই সংস্কৃতি তখনই বজায় থাকবে যখন তার উপযুক্ত পরিবেশ বজায় থাকবে। এক্ষেত্রে কৃষি পরিবেশ উল্লেখযোগ্য।
করম গাছ 
কৃতজ্ঞতা স্বীকার - www.google. com

Significance of the festival..

করম  পরবের  বৈশিষ্ট্য 

Rites and Rituals

করম পরব ভাদ্র মাসের শুক্ল পক্ষের একাদশীর দিন অনুষ্ঠিত হয়। করম পূজাতে ভালো ফসল উত্পাদনের কামনা  ভগবানের কাছে করা হয়। অর্থাৎ এক কথায় বলতে গেলে, করম ঠাকুর  প্রকিতি দেবতা রূপেই পূজিত হন। 

এই সময় সারা মাঠ সবুজ শস্যে ভরে থাকে। প্রকিতি থাকে তার খুশির আমেজে। এই সময় শস্যে ভরা মাঠ দেখলে মনে হয় প্রকিতি তার যেন ঝুলি খুলে দিয়েছে আদিবাসীদের প্রাথর্নায় সাড়া দিয়ে। 

পুজোর নিয়ম মেনেই গ্রামের আদিবাসী ভাইরা খালি পায়ে তাদের বোনদের শ্বশুর বাড়ি থেকে আনতে যায়। বোনরা তাদের ভাইদের জন্য প্রাথর্না করে। পুজোর রীতি অনুযাই পুজোতে সকলে নতুন জামাকাপড় পড়ে। 

আদিবাসীদের জীবনশৈলী উত্পাদিত শস্যের উপর খুবই নির্ভরশীল। এই পুজোর মাধ্যমে তারা মনে করে ভালো শস্য উত্পন্ন হবে এবং সংসার ভালোমত চলবে। 

রীতি -নীতি 

এই পুজোর রীতি হল গ্রামবাসীরা জঙ্গলে গিয়ে পুজোর জন্য কাঠ,ফুল,ফল সংগ্রহ করতে যায়। করম গাছের থেকে তারা একটা ডাল কেটে নিয়ে আসে। ঐ ডালটিকেই তারা 'করম 'দেবতা মনে করে। ডালটিকে ঘিরেই সাঁওতাল গ্রামবাসীরা গান-নাচ করতে থাকে। 

সারারাত ধরে যে নাচ চলে তাকে করম নৃত্য বলা হয়। যে ডালটাকে জঙ্গল থেকে কেটে আনা হয় তাকে 'করম রাজা' বলা হয়। 

ডালটিকে মাটিতে শাবল দিয়ে গর্ত করে পোঁতা হয়।তাতে জল দেওয়া হয়।  দিয়া-বাতি জ্বালিয়ে দুধ,ঘি দিয়ে ডালটিকে পুজো করা হয়। 

পরের দিন করম ঠাকুরকে ফুল দিয়ে পুজো করা হয়। চাল এবং দই প্রসাদ হিসাবে দেওয়া হয়। প্রসাদের একটি নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। লাল রঙের ঝুড়িতে গম রাখা হয় ,তাতে হলুদ এবং শশা দেওয়া হয়। পুজোতে যারা উপোস থাকে পুজো শেষে তারাই এগুলো খায়। 

যুবক আদিবাসীরা বার্লির বীজ হাতে নিয়ে রাখে। সারারাত ধরে চলে আরাধনা। বাবা-মা রা তাদের সন্তানদের জন্য নতুন ধুতি,পাগড়ি ,ঘুংরা কিনে আনে। পরের দিন করম ডালকে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। 

বিশেষ  সুরা  প্রস্তুতি 

আদিবাসীরা সকলে মিলে এই পার্বনে মেতে ওঠে এবং সকলে 'হান্ডিয়া' পান করে। যা মূলত চাল দিয়ে তৈরী সুরা। চাল ছাড়াও এতে দই এবং সবজি থাকে।

পরবের সঙ্গে জড়িত আরো এক গল্প  


এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে আরো একটি ঘটনা প্রচলিত আছে। গ্রামের সাত ব্যস্ত থাকে ফসল উত্পাদন করতে। তদের বউরা মাঠে তাদের জন্যে খাবার নিয়ে যায়। কিন্তু একদিন একটা ঘটনা ঘটে ,গ্রামের 
বউরা স্বামীদের জন্যে মাঠে খাবার নিয়ে যায় নি ,তার ফলে স্বামীরা ক্ষুদা পেট নিয়ে বাড়িতে ফিরে এসে দেখে বউরা সকলে মিলে বাড়ির করম গাছকে ঘিরে গান-নাচ করছে। তা দেখে স্বামীরা খুব রেগে যায় এবং করম ডালকে ছুঁড়ে পুকুরে ফেলে দেয়। তারপর থেকেই তা মনে করে, তাদের সংসারে নেমে আসে অভাব-অনটনের করাল ছায়া। এবং তারা ভাবেন করম ঠাকুর এতে রুষ্ঠ হয়েছে। 

একদিন তাদের গ্রামে এক ব্রাহ্মন সন্ন্যাসী আসে। সাত ভাই-বোন মিলে এর থেকে প্রতিকার পাওয়ার পথ ব্রাহ্মনকে জিজ্ঞাসা করে। ব্রাহ্মন উপদেশ দেয় করম গাছকে পুজো করার জন্যে। তাহলে সাত-ভাইয়ের অর্থনৈতিক অবস্থা ও পরিবার দুইই সুখের হবে। 


কৃতজ্ঞতা স্বীকার:- www.google.com



Wednesday, 18 November 2015

Karam Puja of different areas...

বিভিন্ন অঞ্চলের করম পূজা 




ঝাড়গ্রামের করম  পূজা :- ঝাড়গ্রামে করম পূজার প্রচলন আছে। এই অঞ্চলে ভালো ফলনের জন্যই এই পরব করা হয়। ভাদ্র মাসের শুক্ল পক্ষের একাদশীর দিন নিয়ম মেনে পূজা করা হয়ে থাকে। কুর্মি , ভূমিজ লোকেরা এটি উদযাপন করে থাকে। গ্রামের মোড়ল কোনো গৃহস্থের প্রাঙ্গনকে সার্বজনীন অনুষ্ঠান স্থান হিসেবে নির্বাচিত করে। কুর্মি মেয়েরা রাতের দিকে করম গাছের ডাল কেটে আনে , সেই ডাল বেদী করে পুঁতে দেওয়া হয়। তাকে ঘিরেই চলে নাচগান। এখনকার পুজোতে সাধারনত অংশগ্রহন করে মহিলারা। ভগবানের উদ্দেশ্যে তারা গান গেয়ে থাকে। পুজোয় ব্যবহৃত উপকরণ হল -  ছোলা , মুগ , মটর , কলাই ইত্যাদি। পুজোর শেষে তারা মনে করেন ভগবান খুশি হলে তাদের সব আশা-আকাঙ্খা পূর্ণ হবে।পুজোর পরের দিন গাছের ডালটাকে তারা নদীতে ভাসিয়ে দেয়। কর্মু ও ধর্মুর ব্র্রত কথা শোনানো হয় পুজোর সময়।

আসামের করম পূজা :-  আসামের সাঁওতাল অধিবাসীদের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ন উত্সব হল করম পূজা। তারা মনে করেন , এই পূজা করলে তাদের সকলের কল্যাণ সাধন হবে। ভাদ্র মাসে একাদশীতে এই পূজা করা হয়ে থাকে। মূলত আগষ্ট মাসের মাঝামাঝি সময় দিয়ে এই উত্সব হয়। এই অঞ্চলের সবাই সাধারনত করম বৃক্ষকে ঘিরেই হয়ে থাকে। সাঁওতাল অধিবাসীরা মনে করেন ,করম দেবতা খুশি হলে তারা ভালো ফসল উত্পাদন করতে পারবে এবং পরিবার সুখে থাকবে। মনে করা হয় অথবা মানুষের অন্ধবিশ্বাস , ভগবান খুশি হলে সবার মধ্যে কাজ করার উদ্দমতা দেন এবং জীবন আরোও সুখকর হয়। পূজার সময় এখানে সারারাত ধরে গান , নাচ চলে। নাচকে ঝুমাইর নৃত্য বলা হয়। এখানকার দলগত ভাবে নাচে সাথে নাচের তালে  ঢোল ও মাদল বাজায় পুরুষেরা। 

পুরুলিয়ার করম পূজা :-  এই অঞ্চল জুড়েও ভাদ্র মাসের একাদশীতে অর্থাৎ আগষ্ট মাসের মাঝের দিকে এই উত্সব হয়। এটি চা বাগানের সাঁওতালদের উত্সব। এখানকার লোকেরাও করম নাচকে ঝুমাইরা নৃত্য বলে থাকে। এই অঞ্চলের মহিলারাও পুজোর দিন সারারাত নাচে গানে মেতে ওঠে।


ঝাড়খন্ডের করম পূজা  :- করম উত্সবটি ঝাড়খন্ডে আশ্বিন অথবা কার্ত্তিক মাসে হয়ে থাকে। গ্রামের সকলে মিলে আলোচনা করে দিনটি ঠিক করে। তারপর করম গাছের ডাল আনা হয় কেটে। সেই ডাল গ্রামের মাঠের মাঝখানে পুঁতে দেওয়া হয়। সেই ডালকে ঘিরে চলে অধিবাসীদের উত্সব পুজোর উপকরণ গুলি হল - চাল , ফুল ইত্যাদি। ভগবানকে খুশি করার জন্য সারারাত ধরে চলে নাচ ও গান ধামসা-মাদলের সাথে। 


একথা তো আমরা সবাই জানি , গাছ আমাদের জীবন। গাছের থেকে যেমন আমরা ফলমূল পাই ঠিক তেমনি গাছ আমাদের বেঁচে থাকার রসদ। গাছ না থাকলে অক্সিজেন থাকত না আর আমরাও বেঁচে থাকতে পারতাম না। তাই নিজেদের মঙ্গল সাধনের একটি দিক গাছকে সন্ত্তষ্ট করা, সাঁওতাল  আদিবাসীদের কাছে।

কৃতজ্ঞতা স্বীকার : www.google.com 

Monday, 9 November 2015

Concept of Jawa Song/ Jawa Festival..

জাওয়া গীত 


জাওয়া পরব এবং করম পরব একই দিন অর্থাৎ ভাদ্রমাসের একাদশীর দিন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। যেসব অঞ্চলে কুর্মি - মাহাত - ভূমিজ ইত্যাদি উপজাতির বাস সেইসব অঞ্চলে এই পরব অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ঝাড়খন্ডের সর্বত্রই করম পরবকে কেন্দ্র করে এর অনুষ্ঠান হয়। জাওয়া পরব ও করম পরব অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত। 

জাওয়া গীতে সর্বত্রই কুমার্লি উপভাষার প্রভাব দেখা যায়। জাওয়া গীত আচার-মূলক , তাই অনেকাংশে রক্ষণশীল। 

জাওয়া পরব একটি শস্যোৎসব। এই উৎসব সত্যিই শস্যের সমৃদ্ধিকামনায় অনুষ্ঠিত হয় তা ,নয় সন্তান-কামনাও এর পশ্চাৎপটে রয়েছে। 

'জাওয়া' শস্য-কামনার উৎসব , উর্বরতাবাদ এর মুখ্য পরিচয়। একাদশীর তিন কিংবা পাঁচ কিংবা সাতদিন আগে কুমারী মেয়েরা প্রত্যূষে শয্যাত্যাগ করে বন থেকে শালের দাঁতন কাঠি ভেঙ্গে নিয়ে আসে। তারপর স্নান করে ডালায় কিংবা চুপড়িতে পুকুর বা নদীর বালি ভরে তার ওপর মুগ , কলাই , অড়হর  আদি রবিশস্য এবং ধানের বীজ ছড়িয়ে দেয়। তার ওপর  হলুদ গোলা জল ছিটিয়ে দাঁতন কাঠিগুলো ভেঙ্গে কম্পাস কাঁটার মতো ডালার বালিতে পুঁতে দেয়। এই ডালাটিকে 'জাওয়া ডালি ' বলে। ডালাটিকে সযত্নে কোঠাঘরের ভিতরে কোনো উঁচু জায়গায় , তক্তায় কিংবা শিঁকেতে ঝুলিয়ে রাখা হয়। জাওয়া ডালিকে কোথাও কোথাও 'দৌড়া'ও বলা হয়। এরপর প্রতি সন্ধ্যায় কুমারী মেয়েরা সবাই মিলে ডালাটির চারপাশে ধরে গান গাইতে গাইতে আঙ্গিনায় নিয়ে যায় এবং এই ডালাটিকে ঘিরে ওদের নৃত্যগীত আরম্ভ হয়। পরস্পর হাতে-হাতে ঘন-সংবদ্ধভাবে ধরাধরি করে বৃত্তাকারে এই নৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। জাওয়াগীতে নৃত্য অপরিহার্য। 

জাওয়া আসলে করম ব্রতেরই অঙ্গবিশেষ। করম পূজার সময় গৃহাঙ্গনে , দুটি পাশাপাশি বৃত্তাকার আল্পনার মধ্যে গর্ত খুঁড়ে , কোথাও বা মাটি খুঁড়ে সেই মাটি দিয়ে আয়তাকার পুষ্করিণী তৈরী করে তার দুপাড়ে , দুটি করম ডাল পুঁতে দুটোকে একটি সুতো দিয়ে গাঁঠছ্ড়ার মত বেঁধে দেওয়া হয়। করম রাজা এবং করম রানীর প্রতীক এই দুটি ডাল আসলে সূর্য ও পৃথিবীর প্রতীক ; এই অনুষ্ঠানটি তাদের বিয়ের অনুষ্ঠান। কোথাও কোথাও করম পূজা মন্ডপে সাপ ছেড়ে দেবার রীতি আছে ; কোথাও কোথাও জনশ্রুতি আছে , করম ডালের আড়াল থেকে সাপ বেরিয়ে থাকে। বিয়ে এবং সাপ  সন্তান প্রজননের প্রতীক। পুজোর প্রধান উপকরণ গুলি হলো : বালি , মাটির প্রদীপ , সলতে , ঘি ,জল ,দুধ , চালের গুঁড়ো ,শসা ইত্যাদি। 

করম ব্রত এবং জাওয়াতে শুধুমাত্র কুমারী মেয়েরাই অংশগ্রহন করতে পারে। বিবাহিতা মেয়েরা ব্রত উদযাপনে ,জাওয়া রাখায় এবং পূজায় অংশগ্রহন করতে পারে না।  কোথাও কোথাও বিবাহিত মেয়েরা বিয়ের প্রথম বছরে মাত্র অংশগ্রহন করতে পারে  তবে বিবাহিতারা নৃত্য - গীতে স্বচ্ছন্দে অংশ নিতে পারে। 

 জাওয়া গীতি হল :
১। ঈদ করম ল'জকাল্য ভাই আল্য              লিতে ল 
     আস্য ভাই বস্য পিড়ায় বেউনী দলাই      দিব। 
অর্থাৎ, করম পরবে শ্বশুড়-গৃহে বন্দিনী বধুরা পিতৃ গৃহে যাবার ছাড়পত্র পেয়ে থাকে। নববিবাহিতা বধুরা ঈদ-করমের দিন গুনে শ্বশুড়ালয়ে সব দুঃখকষ্ট অম্লানবদনে সহ্য করে প্রতীক্ষা করে থাকে। 

কৃতজ্ঞতা স্বীকার : ঝাড়খন্ডের লোক সাহিত্য (বঙ্কিম চন্দ্র মাহাত) 


Friday, 30 October 2015

Concept of Vadoriya Jhumur .

ভাদরিয়া ঝুমুর 
অথবা 
ভাদুরিয়া ঝুমুর 


ভাদরিয়া বা ভাদুরিয়া ঝুমুরকে  কেউ কেউ করম নাচের গান বা পাঁতাশালিয়া গীতের সঙ্গে এক করে দেখেছেন। কেউ বা বলেন , ভাদ্রমাসে অনুষ্ঠিত গীতের নাম ভাদরিয়া ঝুমুর। অস্বীকার করবার উপায় নেই , কোথাও কোথাও ভাদ্রমাসে অনুষ্ঠিত করম নাচের গানকে  ভাদর্র্যা বা ভাদরিয়া গীতি বলা হয়। আমরা স্বীকার করি , উল্লিখিত ব্যাখাগুলোর যথেষ্ট গুরুত্ব আছে। তবু আমরা ভাদরিয়া ঝুমুর নামটিই গ্রহণযোগ্য বলে মনে করি। সাধারন ঝুমুর এবং ভাদরিয়া ঝুমুরের মধ্যে বিষয়বস্তুর দিক দিয়ে কোন পার্থক্য নেই।  লৌকিক প্রেম এবং রাধাকৃষ্ণ- প্রণয়লীলা উভয় শ্রেনীর ঝুমুরেরই বিষয়বস্তু। এই দুই শ্রেনীর ঝুমুরের মধ্যে মূল পার্থক্য গানের রচনাশৈলী বা গঠন ভঙ্গিতে এবং সুরে। আসলে ঝুমুরের একটি বিশিষ্ট সুরের নাম ভাদরিয়া , যেমন তামাড় অঞ্চলে প্রচলিত সুরের নাম তামাড়িয়া এবং সেই সুরের ঝুমুরকে কেউ কেউ তামাড়িয়া ঝুমুর বলবার পক্ষপাতী। ভাদরিয়া ঝুমুরের সুর দ্রুত এবং উচ্ছল হয়ে থাকে ; এ সুরকে 'রঙ্গিন ' বলা হয় এই কারনেই। করম নাচের গানের সুরের উন্নত রূপ এই ভাদরিয়া সুর। তাছাড়া রচনাশৈলীর দিক দিয়ে এ গান ক্ষুদ্রতর পদের সাহায্যে গঠিত হয় এবং সাধারন ঝুমুর থেকে আয়তনেও ছোট হয়ে থাকে। গঠনরীতিতে যা সহজেই দৃষ্টি আকর্ষন করে , তা হল প্রতি কলির দ্বিতীয় পঙক্তি। এই দ্বিতীয় পঙক্তির গোড়ায় সাধারনত চার অক্ষরের পরে একটি যতি বা স্বল্প বিরতি থাকে , গায়ন রীতির দিক দিয়ে একে 'সম' বলা যেতে পারে। নিম্নোদ্ধৃত গান গুলো লক্ষ্য করে দেখলেই  আমাদের বক্তব্য পরিস্কার বোঝা যাবে। 

১.  ঘনঘটা রাতিয়া চমকে বিজলিয়া /          থাকি থাকি ,/জলে বিরহ আগুনিয়া। 
     কোথা আছ প্রিয়তম দেখ না                    আসিয়া / অদর্শনে ,আছি মরমে            মরিয়া।।
     অঙ্গ কাঁপে থরথর হানে রতিপতিয়া /      বিফলেতে ,গেল যৌবন বহিয়া ।
     ভারত কিশোরে বলে থাক ধৈর্য              ধরিয়া    /পুরাইব , আশা বদন                চুমিয়া। ।

২.  সারা নিশি রইলাম বসি বকুলতলায়      গো / কমলিনী , ধনি তোমার আশায়      গো। / শীতলী বাতাস বহে শীতে            কাঁপে গা গো। / সাড়া নাহি , সে ত          ডাকে ইশারায় গো। / আর কি                বিশ্বাস হয় তোমারি কথায় গো /            নরোত্তমায়, ও বাদ সাধিলে আমায়          গো ।।

৩.  পিয়া পিয়া বলিয়া কাঁদত বিনোদিয়া       / শুনা ভেল , মোর গোকুল নগরিয়া।       আসিব বলিয়া পিয়া গেল ছাড়িয়া /         দিবানিশি , ধনি রহল নিরখিয়া ।।         অবলা জাতিয়া কেইসে হিয়া /মনে         পড়ে ,কালার নবীন পিরিতিয়া। বিষ্টু        অনাথে ভণে মনে মনে খুঁজিয়া /              প্রাণনাথ ,মম প্রাণ গেল হরিয়া ।।

৪.  শীত লানিল হিল্লোলে তরুকোলে            লতা দোলে / মেঘকোলে ,দোলে              সোহাগে চপলা গো। / নীরদঘটা              নিরখি নাচিছে শিখিনী - শিখী /            সেহ দেখি , বাড়ে বিরহের জ্বালা গো।      / আমি শ্যাম বিরহিনী কাঁদি                  দিবসরজনী / একাকিনী , ভুলি                বিরহের খেলা গো। / ললিতা কয়            রাধায় দ্বিজ ভবপ্রীতা গায় / পাবে            শ্যাম , রাই হয়ো না উতলা গো ।।

৫.  কোকিলার ডাক শুনি নিজমনে ভাবি      গুণি / আমার কলপি - কলপি উঠে          ছাতি রে ,/ ওরে পাখি , কেন ডাক            নিশিভোর রাতি। / দিবানিশি কেঁদে        মরি না আসিল বংশীধারী / আমার        ঝর ঝর ঝরে দুটি আঁখি রে। /নিশি          হল অবসান না আসিল বাঁকা শ্যাম /      শ্যাম আমায় দিয়ে গেল প্রেমে ফাঁকি      রে। / সুন্দর বলে গুন গো রাধা তুমি          যে     প্রাণের আধা /শ্যাম এসে                মুছাবে দুটি আঁখি রে ।।



কৃতজ্ঞতা স্বীকার --
ঝাড়খন্ডের লোক সাহিত্য 
(বঙ্কিমচন্দ্র মাহাত ) 

Sunday, 18 October 2015

Karam Dance.

করম  নৃত্য 


করম নাচ বিভিন্ন নামে পরিচিত। দাঁড়শাল্যা , দাঁড়ঝুমুর , পাতাশাল্যা , ঝিঙাফুল্যা ইত্যাদি। প্রথম চারটি নামে  'দাঁড় ' শব্দটি আদিতে সাধারণ শব্দ হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। 'দন্ড' শব্দ থেকে 'দাঁড়' শব্দের উদ্ভব, দন্ডায়মান অবস্থায় যে নৃত্য তার নাম দাঁড় নাচ। দাঁড় নাচের গান দাঁড়ঝুমুর নামেও পরিচিত। করম নাচ শ্লথ এবং দ্রুত উভয় গতিতে হয়ে থাকে। তবে দ্রুত  গতির প্রাধান্যই বেশি। সম্প্রদায় বিশেষে এই নাচে যথেষ্ট তারতম্য রয়েছে। খারিয়াদের করম নাচ অত্যন্ত দ্রুত লয়ের হয়ে থাকে। এক আদিম উদ্দামতা এবং উল্লাস যেন তাদের নৃত্যের মধ্যে দিয়ে পরিস্ফুট হয়ে ওঠে। এ-নৃত্য প্রায় দৌড়ানোর পর্যায়েই পড়ে। 

করম নাচের গানগুলো আকারে যেমন ক্ষুদ্র , তেমনি গায়ন-কাল ও সীমিত। এক কলি , দু'কলির গান ,একবার দুবার আবৃত্তির পরই শেষ হয় , আরম্ভ হয় নতুন গান। এ গানের শেষ নেই , উদ্দাম নৃত্যেরও শেষ নেই। অক্লান্ত ,অশ্রান্ত নৃত্য গীতির আসর সারারাত্রি জমজমাট হয়ে থাকে। অনেকে এইসব গান ও নাচের মধ্য দিয়ে আধ্যাত্মিকতার উপলব্ধিও করে থাকেন।

এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়েই একদিন আদিবাসী সমাজ জীবনের সখা কিংবা সখীত্ব পাতানো হত , অর্থাৎ স্বামী - স্ত্রী নির্বাচন করা হত বলে একে পাতানাচ  ও বলে। করম পরব উপলক্ষ্যে পাতা শুদ্ধ ডালকে কেন্দ্র করে নাচ হয় বলেও এর নাম পাতানাচ। করম পরবকে কেন্দ্র করে যে নৃত্য তা করম নৃত্যই। ভাদ্রের একাদশীতে এই পরব হলেও আয়োজন চলতে থাকে অনেক দিন আগে থেকে। নৃত্যের আসর বসে প্রতি সন্ধ্যায় শ্রাবণ মাস থেকেই , চলে মধ্যরাত্রি অবধি। করম ডাল পুঁতে পুজো করা হয় এবং নৃত্যগীত অনুষ্ঠিত হয়।

এই নৃত্যে স্ত্রী ও পুরুষ উভয়ই যোগ দিয়ে থাকে। প্রধানত এটি কুমারী নৃত্য , অবিবাহিত মেয়েদের অবাধ স্বাধীনতা করম পরবে। তবে সধবারাও এই নৃত্যে অংশগ্রহণ করে। পরবের প্রায় দিন দশেক আগে থেকে প্রতি সন্ধ্যায় কুলিতে বা গ্রামের পথে ও আখড়ায় মিলিত হন মেয়েরা হাত ধরাধরি করে , গায়ে গা  ঠেঁকিয়ে মৃদুতালে শুরু করেন নাচ -

   "সাঁঝে ফুটে ঝিঙা ফুল সকালে মলিন 
    আজ কেনে বঁধুর বদন মলিন হে ?"

পাড়ায় পাড়ায় করম ডাল এনে দেবতার প্রতীক রূপে পূজা করা হয়। ডালায় যব ,ভুট্টা রাখা হয়। অনুষ্ঠান শেষে নব অঙ্কুরিত বীজ গাছের চারা প্রীতিসম্ভাষন জানাতে পরস্পর একে অপরের কানে গোঁজে।

করম অন্যতম শ্রেষ্ঠ শষ্যউৎসব। নৃত্য - গীত এর মূল অনুষঙ্গ। নৃত্য - গীতি বাদ দিয়ে করম ব্রতের আয়োজন কল্পনাই করা যায় না। করম নাচে শরীরের যে অঙ্গভঙ্গি প্রকাশ পায় , তাতে ধান্যারোপনের জন্য মাটি কাদা করা, ধান্যরোপন , ধান্যচ্ছেদন আদি বিভিন্ন মুদ্রা প্রকাশ পেয়ে থাকে।

যেসব করম গানের সঙ্গে নৃত্য প্রদর্শন করা হয় সেগুলি হল -

১.  মহলের ভিতরে থাকি জানালায়                নয়ন রাখি 
       আমি শুব জানালার গড়াতে ,
        খোঁচা দিয়ে উঠাবে আমাকে ;

২.  উঠিল পুন্নিমার চাঁদ দেশ হল্য আল রে ,
      রাজা ,এই চাঁদে অযধ্যা শিকার।
এখানে বলা হয়েছে আদিম মানুষ শিকার নির্ভরশীল ছিল। অযোধ্যা পাহাড় শিকারের প্রশস্ত অঞ্চল ছিল।

৩.  কিংবা লয়ে আলি রে মন কিবা লয়ে          যাবি ,
       এমন সুন্দর দেহ মাটিতে মিশাবি ,
       রে মন , এ ভব সংসার ছারি যাবি। 
এখনে বলা হয়েছে জীবন বড়ই ক্ষণস্থায়ী , একথা জেনেও মানুষ হতাশ হয় না। বরং তারা হাসে , গায় , নাচে। তারা ঈশ্বরে বিশ্বাসী ; ঈশ্বর যা বিহিত করবেন , তাই হবে। তাই বলে উপবাসী রেখে কৃচ্ছ্র সাধনায় প্রানের সমস্ত কোলাহলকে নিস্তব্ধ করে দিতে হবে , তা তারা স্বীকার করে না।

কৃতজ্ঞতা স্বীকার -
 ঝাড়খন্ডের লোক সাহিত্য
 (বঙ্কিমচন্দ্র মাহাত )

      



Tuesday, 6 October 2015

Karam song...

           করম গীতি
              https://youtu.be/n7fL6jCQj8I
বর্ষাকালীন এক প্রকার শস্য উৎসব এর  নাম করমউৎসব। ভাদ্র মাসের শুক্ল পক্ষের একাদশীতে সমগ্র পশ্চিম সীমান্ত বাংলার জনসমাজ করম পরবে মেতে ওঠে। সন্ধ্যার প্রাক্কালে পার্শ্ববর্তী বন থেকে করম গাছের দুটি শাখা কেটে নিয়ে আসে তরুণীরা। সারা পথ ধরে করম ঠাকুরের গান ধ্বনিত হতে থাকে। দুটি শাখাকে গ্রামের কোনো মধ্যবর্তী স্থানে কাঁচা মাটির বেদির উপর পুঁতে দেওয়া হয়। তারপর সারারাত ধরে চলে নাচ আর গান। এর নাম হলো করম গীতি। মূলত আদিবাসীদের পরব বলে এ গান নৃত্য বহুল। করম গানের সহযোগী নাচকে বলা হয় করম নাচ। অদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে এই পরব অবশ্যকৃত। এই গানকে দাঁড়শালিয়া নামেও অভিহিত করা হয়। এ গান যেন সঙ্গীত জগতের আদিম সঙ্গীত। বিনোদন নয় - নানারকম জাদু বিশ্বাস থেকে এর জন্ম। মাত্র দুটি চরণ ও চারটি মাত্রার উপর প্রতিষ্ঠিত এই গান দ্রুত তালের। সারারাত ধরে মাদলের ধিং ধিতাং ধিতাং - বোলের সঙ্গে সমতলে চলে পদক্ষেপণ এবং সুরক্ষেপন। সাধারনত নারীরা এই গানের ধারক। এই গানে থাকে জীবন ও সমাজের বিচিত্র অনুভূতির কথা। যা তাদের জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে যুক্ত থাকে। 
  কথা গুলি হলো :- 

ক> আদারে বাদাড়ে ঝিঙ্গা ঝিঙ্গায় শুধুই 
                                             জালি হে ,
      ননদ মাগী ছল ছল তুলে ডালি ডালি        হে। 

খ > বাঁধ বাঁধালে না বাঁধালে ঘাট হে ,
       ডালিম লাগাই বধু গেল পর দেহ               হে।

গ > পাকিল ফাটিল ডালিম চোরে তুলে 
                                          খায় হে। 

ঘ > এমন সময় বঁধু ঘরে আমার নাই হে 
       একদিনকার হলেদ বাঁটা দুদিনকার 
                                       বাসি লো ,
       মা বাপকে বল্যে দিহ , বেজাঞ্চ সুখে 
                                            আছি লো।


এসব গানের ভাষা এবং ভাব অকৃত্রিম। 
তাই তো অবলীলায় বলতে পারে  :-

      বাসি ভাতে নুন লঙ্কা লুচির মজা 
                                         পুরি হে। 
      নৌতন পিরিতির মজা চোখ ঠরাঠরি       হে। 

কিংবা , এখানে উল্লেখ করতে পারি -

           আমার বঁধু হাল করে কেঁদে কানালির ধারে। হায় হায় - মাথার ঘাম চোখে পড়ে ,
         দেখি হিয়া ফাটে। 
ননদিনী লো , আমি নিজে যাব 'কাসিয়াম ' দিতে। 

এখানে শ্রেণী সমাজের সুখ - দুঃখ , হাসি - কান্না , আনন্দ - উচ্ছাসের বহি:প্রকাশ। এই গানে সমাজে বাস্তবধর্মী জীবনচিত্র ফুটে ওঠে। 

করম নাচের গানে আছে -
         
           ' সাঁঝে ফুঁটে ঝিঙ্গাফুল
             সকালে মলিন 
              আজ কেনে বঁধুর 
              বদন মলিন হে ?
             সাঁঝে ফুটে ঝিঙ্গাফুল 
             সকালে মলিন।'

অর্থাৎ ঝিঙ্গাফুলের সৌন্দর্য যেমন ক্ষণস্থায়ী , মানব জীবন ও তেমনি ক্ষণস্থায়ী। এই ক্ষণস্থায়ী জীবনকে আনন্দময় করে তোলাই মানব জীবনের অন্যতম লক্ষ্য। ঝিঙ্গাফুলের সৌন্দর্যময় অস্তিত্ব যেমন ক্ষণস্থায়ী করম গানের আকারও তেমনি ক্ষুদ্র। এই ক্ষুদ্র আয়তনের মধ্যে জীবনের সামগ্রিক রূপ পরিস্ফুট করে তোলাই করম গীতির অন্যতম বৈশিষ্ট বলে একে ঝিঙ্গা গীতিও বলা হয়ে থাকে।  
নৃত্য গীতির অনুষ্ঠানের জন্য ঝাড়খন্ডের প্রতি গ্রামেই একটি করে আখড়া থাকে। কর্মক্লান্ত দিনের শেষে আখড়া প্রাঙ্গনে সবাই সমবেত হলে বন্দনা গীতির মাধ্যমে নৃত্যানুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। বন্দনা গীতির পর গায়কের নিজেদের ইচ্ছামত গান নির্বাচন করেন।


কৃতজ্ঞতা স্বীকার - লোকয়ত ঝাড়খন্ড (ড : বিনয় মাহাত )